টেকনাফে ৬ সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনায় আট মাস পার হলেও মামলার প্রধান আসামী নুরুল হক ওরফে ভুট্টোকে এখনও গ্রেফতার করতে পারিনি পুলিশ। ভুট্টোর বিরুদ্ধে ইয়াবা , মানব পাচারসহ একাধিক মামলার থাকলেও কোন মামলায় এখও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না, এমনই অভিযোগ স্থানীয়দের। তবে মাস শেষে মাসোয়ারা বিনিময়ে বার বার পার পেয়ে যাচ্ছে নাজির পাড়ার এজাহার মিয়ার পুত্র নুরুল হক ভুট্টোসহ অন্যান্য অপরাধীরা। টেকনাফ এলাকার লোকজন জানান, স্থাণীয় প্রভাবশালী এবং রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থাকা ভুট্টো টেকনাফ নাজিরপাড়াসহ থানার আশপাশে প্রকাশ্যে ঘুরছে। এবং নিয়মিত ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। সে সাথে নুরুল হক ভুট্টোর নেতৃত্বে একটি বিশেষ বাহিনী প্রতিনিয়তই এলাকায় নীরহ মানুষদের উপর হামলা চালাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নুরুল হক ভুট্টোর বিরুদ্ধে টেকনাফ এবং কক্সবাজার মডেল থানায় একাধিক মামলা এবং দশটিরও বেশী সাধারন ডায়েরি করেছে টেকনাফের ভোক্তভুগিরা। ভুট্টোর সাথে তার বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়ে সাধারন মানুষদের উপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে তার সেকেন্ড ইন কমান্ড এবং আপন ভাই নুর মোহাম্মদ মংরী, নুরুল আমিন খোকন, নুরুল ইসলাম নুুরু। এবং তার ভাগিনা একই এলাকার নুরুল আলমের পুত্র হেলাল, বেলাল, আবছার ও মো: হোছন। তাদেও বিরুদ্ধেও টেকনাফ থানায় ইয়াবা ব্যবসা এবং মানবপাচারের অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।
২০১৬ সালের ১৩ মে পেশাগত দায়িত্ব পালন কালে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের কক্সবাজার প্রতিনিধি তৌফিকুল ইসলাম লিপু, সময় টিভির জেলা প্রতিনিধি সুজা উদ্দিন রুবেল, একাত্তর টিভির জেলা প্রতিনিধি কামরুল ইসলাম মিন্টসহ ৬ সাংবাদিককে ভুট্টোর নেতৃত্বে কুপিয়ে আহত করা হয়। এই সময় একটি মাইক্রোবাস, সাংবাদিকদেও ব্যবহৃত ক্যামেরা, ল্যাপটপ ভাংচুর ও লুট করা হয়। ঘটনার দুই দিনপর তৌফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে বাহিনী প্রধান ভুট্টোকে প্রধান আসামী করে ১৯ জনের বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করা হয়। ঘটনার কয়েকদিন দিন পর কক্সবাজার শহরে পৌরসভার গেইটের সামনে মামলার বাদি লিপু ও আহত রুবেলকে আরেক দফা হামলা চালিয়ে অপহারণের চেষ্টা চালায়। এই ঘটনায় সুজা উদ্দিন রুবেল বাদি হয়ে ভুট্টোকে প্রধান আসামী করে ৫ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডের থানায় অরেকটি মামলা দায়ের করে। মামলা নং-৬০/৩৮৬। বর্তমানে মামলা দুইটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এদিকে মামলায় কয়েকজন আসামী গ্রেফতার হলেও পুলিশ প্রধান আসামী ভুট্টোকে গ্রেফতার না করায় মামলায় বাদীসহ আহতরা আতংকে রয়েছে। যে কোন সময় আবারো ভুট্টো এবং তার বাহিনীর লোকজন হামলা করতে পারে এমনই আশংকা করছেন দুই মামলার বাদী লিপু এবং রুবেল।
মামলার বাদী তৌফিকুল ইসলাম লিপু জানান, শুরু থেকে পুলিশের ভূমিকা ছিল রহস্যজনক। আজ দীর্ঘ আট মাস পর হয়েছে পুলিশ এখনও মামলার প্রধান আসামী ভুট্টোকে গ্রেফতার করতে পারিনি।
অভিযোগ রয়েছে টেকনাফ থানায় সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মজিদেও সাথে বেশ সখ্যতা রয়েছে শীর্ষ সন্ত্রাসী , ইয়াবা এবং মানব পাচারকারী নুরুল ইসলাম ওরফে ভুট্টোর। তবে বিষয়টি নিয়ে তিনি গনমাধ্যমে বেশ কয়েকবার অস্বীকারও করেন।
এদিকে ভুট্টোকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাঈন উদ্দিন জানান, আমি কয়েকদিন হলো টেকনাফ থানায় যোগদান করেছি। সাংবাদিক হামলার ঘটনার বিষয়াট আমি শুনেছি। তিনি জানান, অপরাধী যে হোক না কেন তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
পাঠকের মতামত: